স্পোর্টস ডেস্ক: সমালোচকরা তেতে রয়েছে। চারদিকে কথার তীর তাক করা। রাজ্যের অভিযোগ তার বিপক্ষে। তিনি ইচ্ছে করে তামিম ইকবালকে দলে নেননি। তার কারণেই বিশ্বকাপ খেলা হচ্ছেনা দেশ সেরা ওপেনারের। উল্টো তামিমকে নানা তীর্যক কথা বলে রাজ্যের সমালোচনার মুখে সাকিব আল হাসান।
ওদিকে শেষ মুহর্তের প্রস্তুতিও ভাল হয়নি। ভারত গিয়ে সেভাবে প্রস্তুতিও নিতে পারেননি। বিশ্বকাপের যে দুটি অফিসিয়াল প্র্যাকটিস ম্যাচ ছিল তার একটিতেও খেলতে পারেননি। এমনকি চাপা গুজব উঠেছিল সাকিব আল হাসান আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ নাও খেলতে পারেন। পরে অবশ্য টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে জানানো হয়েছে যে, নাহ! সেটা নেহায়েত গুজব।
শেষ পর্যন্ত সাকিব খেললেন। আজ শনিবার ভারতের হিমাচল প্রদেশের শীতকালিন রাজধানী ধর্মশালায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে সকালে টস ভাগ্যে জেতার পাশাপাশি বল হাতেও সেই নির্বিকার, ভাবলেশহীন ও সাবলীল সাকিব।
আবারো নিজেকে মেলে ধরলেন ‘চ্যাম্পিয়ন’ অলরাউন্ডার। আরও একবার প্রমাণ দিলেন, মাঠের বাইরের কোন ঘটনাই তাকে এতটুকু বিচলিত, বিব্রত করতে পারে না। তিনি সে সব নিয়ে মাথাও ঘামান না। প্রস্তুতিতে কমতি থাকলেও মাঠে সাকিব সব সময়ই এক।
তার মাপা বোলিং আর নিপুণ দল পরিচালনা এবং বোলার ব্যবহারে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম সেশনেই রীতিমত চালকের আসনে বাংলাদেশ। দলের হয়ে অন্যতম সেরা বোলিং স্পেলটি যথারীতি সাকিবের।
প্রথম স্পেলে ৫ ওভারে ১৫ রানে ২ উইকেট দখল করা বাংলাদেশ ক্যাপ্টেনের ঝুলিতে জমা পড়েছে মোট ৩ উইকেট (৮ ওভারে ৩০ রান )। অধিনায়ক সাকিবের সমান ৩ উইকেট (২৯ রানে) শিকারি অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজও। মূলত এই দুই স্পিনারের সাঁড়াসি বোলিংয়ের সামনেই দু‘শোর নিচে দেড়শোর ঘরে (১৫৬) আফগানদের বেঁধে ফেলতে পেরেছে টাইগাররা।
আফগানদের বিপক্ষে সাকিবের বিশ্বকাপ রেকর্ড দুর্দান্ত। আজকের আগে আফগানদের বিপক্ষে বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে দু’বার খেলে প্রতিবার ব্যাট ও বল হাতে দারুন পারফর্ম করেছেন সাকিব। একবার হয়েছেন ম্যাচ সেরা। আরেকবার ম্যাচ সেরার পুরস্কার হাতে না পেলেও ছিলেন অন্যতম সেরা পারফরমার।
৪ বছর আগে ইংল্যান্ডেন সাউদাম্পটনে এই আফগানদের বিপক্ষে বল হাতে ৫ উইকেট (২৯ রনে) শিকারের পাশাপাশি ৬৯ বলে ৫১ রানের দায়িত্বপূর্ন ইনিংস খেলে চৌকশ নৈপুন্যে দল জেতানো পারফরমেন্সে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন সাকিব। তার আগে ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় এই আফগানদের বিপক্ষে ৫১ বলে ৬৩ আর পরে বল হাতে ৪৩ রানে ২ উইকেট।
৫৬ বলে ৭১ করে মুশফিক ম্যান অফ দ্য ম্যাচ। বাংলাদেশ পায় ১০৫ রানের বড় জয়।
দেখা যাক, বল হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়া বাংলাদেশ অধিনায়ক এবার ব্যাট হাতে অবদান রেখে পর পর দুই বিশ্বকাপে আফগানদের সাথে ম্যাচ সেরার পুরষ্কার হাতে হাসেন কি না?